বাংলাদেশের অন্যতম সফল উদ্যোক্তা "মাহমুদুল হাসান সোহাগ" উদ্ভাস এবং অন্যরকম গ্রুপ এর প্রতিষ্ঠাতা সমসাময়িক বিষয় এবং উনার পরিকল্পনা এবং নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য নির্দেশনা মূলক সাক্ষাৎকার দিয়েছেন।
আপনিতো অন্যরকম গ্রুপ এর চেয়ারম্যান। এই
গ্রুপের অধীনে আছে পাই ল্যাবস, রকমারি ডট কম, টেকশপ বিডি ডট কম, অন্যরকম ইলেক্ট্রনিক্স কোম্পানি
লিঃ, অন্যরকম সফটওয়্যার লিঃ, অন্যরকম
প্রকাশনী ইত্যাদি প্রতিষ্ঠান। সেই সাথে উদ্ভাসও আপনাদের পরিচালিত প্রতিষ্ঠান। এই
প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন রকম বিষয় নিয়ে কাজ করছে। এ রকম বিভিন্ন দিকে কাজ করার
পেছনে কি বিশেষ কোন কারণ আছে?
প্রথমত, প্রতিষ্ঠান গুলো দেখলে “অসংযুক্ত বিন্দু” মনে হবে। কিন্তু আপনি যদি
কোম্পানিগুলোর গভীরে যান তাহলে লক্ষ্য করবেন এগুলো অসংযুক্ত বিন্দু না সবগুলো একটি
আরেকটির সাথে সংযুক্ত। সংযুক্ত এইভাবে যে, আমাদের ট্যাগ লাইন,
আমদের স্বপ্ন, আমাদের থিম “অন্যরকম বাংলাদেশ”। কেন আমরা “অন্যরকম
বাংলাদেশ” চাই? কারণ আমাদের যেই “এইরকম বাংলাদেশ”, আমরা কেউই সেটি নিয়ে খুশি না। আমরা
এখন যেই অবস্থানে আছি সেটা আমাদের কারোই কাম্য না। তাই আমাদের স্বপ্ন “অন্যরকম বাংলাদেশ”।
তো “অন্যরকম বাংলাদেশ” গড়তে হলে শুরুতে বুঝা দরকার “এইরকম বাংলাদেশ”- এর সমস্যাগুলো কী কী? যে কাউকে এই প্রশ্ন করলে মুহূর্তের মধ্যেই ৪০/৫০টি সমস্যার লিস্ট তৈরি করে
ফেলা সম্ভব। আর এত লম্বা লিষ্ট দেখার পর মুহূর্তের মধ্যে মোটামুটি “হতাশ” বানিয়ে ফেলাও সম্ভব। আমরা হতাশ হতে চাইনি বলে
ঢুকতে চেয়েছি সমস্যার গভীরে, সমস্যার গোড়ায়। এ প্রসঙ্গে আমার
পছন্দের একটা উক্তি আছে:
In the beginner minds there are many possibilities in
expert mind a few. ~ Shunryu Suzuki Roshi, Zen Mind, Beginner’s Mind
এখনও এক্সপার্ট মাইন্ড হতে পারিনি, কিন্তু
দেশের সমস্যার লিস্ট-টা নিজের দৃষ্টিতে ছোট বানিয়ে নিয়েছি। আমাদের কাছে মনে হয়েছে
মূল ৩টি বিষয়ে কাজ করতে পারলে হয়ত দেশের অনেক রকম সমস্যার সমাধানেই কিছুটা হলেও
হয়ত ভূমিকা রাখা যাবে। সেই ৩টি বিষয় হলঃ
§
শিক্ষা
§
ইনোভেশন তথা গবেষণা
§
এন্টারপ্রেনিউয়ারশীপ
আমরা মূলত এই তিনটি জায়গা নিয়েই কাজ করি। আমরা যাই করিনা
কেন এই তিনটির সাথে সংযুক্ত কিছু একটা করি। বাহ্যিকভাবে দেখলে আমাদের উদ্যোগ গুলো
অসংযুক্ত বিন্দু বলে মনে হবে কিন্তু আমাদের কাজের ভিতরের দিকে যত যেতে থাকবেন তত
দেখবেন যে একই জায়গা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে সবগুলো কোম্পানি করা হয়েছে।
আপনাকে দেখে অনেক উদ্যোক্তাই অনুপ্রানিত হবেন
হয়ত একই সাথে অনেকগুলো কোম্পানি শুরু করতে। এ ব্যাপারে আপনি কিছু বলবেন ?
এতগুলো
কোম্পানি কিন্তু আমি প্রথম থেকেই শুরু করিনি এবং একসাথে অনেক কিছু শুরু করা আমি
সাপোর্ট করি না।
আমাদের উদ্যোক্তাদের অনেকের একটি বড় প্রবলেম হল ডি-ফোকাসিং, সেটি
আমারও ছিল। Briggs Myers এর থিওরি অনুসারে পৃথিবীতে ১৬
টাইপের মানুষ আছে। এর মধ্যে আমার টাইপ এর নাম ENTP। এই প্রোফাইলের লোকজনের
উদ্যোক্তা হওয়ার ঝোক একটু বেশী থাকে। আর এই প্রোফাইল এর সবচেয়ে দুর্বল দিক হল
ডি-ফোকাসিং। ফলে উদ্যোক্তাদের অনেকেই এর জন্য একসাথে অনেক কিছু করার চেষ্টা করে।
সমস্যা কিংবা সম্ভাবনা দেখলেই তাদের ফোকাস হওয়া খুব স্বাভাবিক, যা
পরিণতিতে খুব ভাল ফল দেয় না। আমিও আগে অনেক ফোকাসিং প্রবলেম-এ ভুগতাম। এখন দিনে
দিনে আরো ফোকাসড হওয়ার প্রবণতা বাড়ানোর চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমার পার্টনার লিটন ছিল
ঠিক আমার উল্টো প্রোফাইল এর। যে জন্য আমরা দু’জনে মিলে হয়ত
ব্যালেন্স করতে পেরেছি। এবং এটা ঠিক যে, একটা লম্বা সময় ধরে
আমরা কঠিন সময় পার করেছি এবং আমার পথ পরিবর্তন করিনি।
নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য তাই আমার পরামর্শ যতবেশী সম্ভব ফোকাসড হওয়া এবং অন্তত
যে কোন একটা উদ্যোগকে সফল করা। যখন একটি দুইটি কোম্পানি থেকে ইনকাম ঠিকভাবে আসবে
এবং কোম্পানি ভালভাবে চলবে তখন নতুন কোন সমস্যার সমাধান নিয়ে কাজ শুরু করা যায়।
পার্টনার এর বিষয়টা যেহেতু আসল-ই, তো
পার্টনার বিষয়ক একটা প্রশ্ন করা যাক। উদ্যোক্তাদের বড় একটি সমস্যায় পরতে হয়
পার্টনার নির্বাচন করায়। এই বিষয়ে আপনার কোন পরামর্শ আছে?
এইটা খুব ইম্পরট্যান্ট একটা প্রশ্ন এবং ইম্পরট্যান্ট একটা
বিষয়। এই ক্ষেত্রে একটা বিষয় হল ন্যাচারাল ফ্রিকোয়েন্সি মিলে করা। যেমন একটু আগেই
আমি আমার পার্টনার লিটন এর সাথে কথা বললাম। আমি আর ও কিন্তু সম্পূর্ণ উল্টো
প্রোফাইলের। যেমন আমি কথাবার্তা অনেক বলি, বিভিন্ন প্রোগ্রামে আমি যাই।
আর ও কখনো কোন প্রোগ্রামে যেতে চায় না। এমনকি লিটনকে অনেকেই চেনেও না। কিন্তু
আমাদের সম্পর্ক ১৪ বছরের। এই ১৪ বছরে সর্বমোট ১৪ বারও হয়নি যে আমাদের ঝগড়া হয়েছে।
কিন্তু বিভিন্ন কাজের সিদ্ধান্ত নেবার সময় আমাদের মাঝে আলোচনা অথবা বিতর্ক হয়। আমি
বলি এটা এভাবে করলে ভালো হবে আর ও বলে এটা ওভাবে করলে ভালো হবে। কিন্তু কেন আমাদের
ভাল পার্টনারশিপ হয়েছে? তার কারন হচ্ছে আলটিমেট ভিশন।
আলটিমেট ভিশন যদি এক না হয়, যত স্কিল ব্যক্তিই হোক না
কেন যাকে নিলে মনে হবে কোম্পানির গ্রোথ হবে, আমার মতে তাকেও
পার্টনার বানানো ঠিক হবে না। অনেক উদ্যোক্তার উদ্যোগ ভেস্তে যাচ্ছে শুধুমাত্র
পার্টনারশিপের সমস্যার কারণে।
কারন তাঁরা অল্প সময়ের দিকে তাকাচ্ছে, তাঁরা
লংটার্মে দেখছেনা যে আলটিমেট ভিশনই সবচেয়ে বড় ভুমিকা রাখে। তাই দেখেন আমরা দুইজন
দুইভাবে চিন্তা করি। আমাদের কাজ-কর্মের সিস্টেম দেখলেই বুঝবেন যে আমরা দুইজনে দুই
রকমের। কিন্তু আমাদের আলটিমেটলি মিলে যায় যেহেতু দৃষ্টি এক জায়গাতেই। দুইজনই দুই
জনের প্রচেষ্টাকে সম্মান করি তাই কোন সমস্যা হয় না।
একটা ছোট উদাহরণ দিয়ে বলি কয়েকদিন আগেই আমাদের দেশের প্রথম
সায়েন্স কিট (যেটার নাম দিয়েছি আমরা “অন্যরকম জ্ঞান বাক্স”
) বাজারে এনেছি। আমরা যখন এটির দাম ঠিক করতে গেলাম দেখলাম এমাজনে (amazon.com)
যে কিট গুলো পাওয়া যায় ওইগুলোর দাম ২০ ডলার বা তার বেশী। কিন্তু
বাংলাদেশে এনে বিক্রি করতে গেলে বহন খরচ, ভ্যাট/ট্যাক্স,
ব্যান্ড্রিং, প্রফিট কমপক্ষে ৩ হাজার করে
বিক্রি করতে হবে। ৩ হাজার টাকা দিয়ে কেনা বাংলাদেশের বাচ্চাদের সামর্থ্যের বাহিরে।
আমাদের কিট আমাজনের এর কিট থেকে অনেক বেশী ভালো বলে আমরা মনে করি। প্রতিটি কীটে
এক্সপেরিমেন্ট এর সংখ্যা ওদের দ্বিগুনের ও বেশি। আমরা চাইলে এটার দাম ১ হাজার টাকা
ধরতে পারি যেখানে আমরা এটির দাম ধরেছি মাত্র ৬৫০ টাকা। এটি নিয়ে আমার আর লিটন এর
মধ্যে বিতর্ক হয়না। কেন হয়না? কারন আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার
হচ্ছে বাচ্চাদের শেখানো। তাই আমরা দাম কমিয়ে দিয়ে সব বাচ্চাদের হাতের নাগালে এনে
দিয়েছি। তাই পার্টনার নির্বাচনের সবচেয়ে বড় যে ব্যাপারটি খেয়াল রাখতে হবে সেটি হল
আলটিমেট ভিশন এক হতে হবে।
“অন্যরকম জ্ঞান বাক্স”
– ব্যাপারটা তো বেশ ইন্টারেস্টিং মনে হচ্ছে। এটার ব্যাপারে আরও কিছু
একটু বললে ভাল হয়।
“অন্যরকম জ্ঞান বাক্স” আমাদের “অন্যরকম
ইলেক্ট্রনিক” এর একটি প্রোডাক্ট। এর ফ্যাক্টরি হচ্ছে
মিরপুর-এ। “অন্যরকম ইলেক্ট্রনিক” এর
আমাদের কয়েকটি ইলেক্ট্রনিক প্রোডাক্ট মার্কেটে আছে। “অন্যরকম
জ্ঞানবাক্স” টা সম্প্রতি এসেছে। বাচ্চারা যে সায়েন্সের প্রতি
আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে, আমারা যাতে সেটা ফিরিয়ে আনতে পারি এবং
ছোট বেলা থেকে সৃজনশীলতা এবং জানার আগ্রহ নিয়ে বড় হতে পারে, সেজন্য
“অন্যরকম জ্ঞানবাক্স” নামে ছোট ছোট
সায়েন্স কিট বানাচ্ছি। এই সায়েন্স কিট গুলো বেশ এক্সাইটিং হয়েছে। এটার মধ্যে ছোট
ছোট সায়েন্স কিট দিয়ে বাচ্চারা এক্সপেরিমেন্ট করতে পারবে। গ্লোবালি যেগুলো সবসময়
পাওয়া যায় সেগুলো থেকে ভালো হয়েছে। নেক্সট যে ভার্সন টি হচ্ছে সেটা আরো এক্সসাইটিং
হচ্ছে। সেটি হবে গল্পের উপর নির্ভর করে। রোবটের একটি চরিত্র আছে নাম হচ্ছে “রোবেকুব”। রোবেকুব হলো একটা বেকুব রোবট। আরেকটা
পিচ্চি মেয়ে অরনি। এই দুজনের গল্প। এই দুজনের গল্পের মাঝে মাঝে এক্সপেরিমেন্ট
গুলো।
আপনার মতে, আপনি কাকে
উদ্যোক্তা বলেন আর কাকে ব্যবসায়ী?
আমার দৃষ্টিতে উদ্যোক্তা হল সেই ব্যক্তি যে একটা প্রবলেম
দেখে, প্রবলেম
দেখে ইন্সপায়ারড হয় সেটা সমাধান করার জন্য ফেসিনেটড হয়। প্রবলেম সলভ করতে যেয়ে যদি
দেখে যে এটাকে টেকসই করার জন্য একটা বিজনেস মডেল দরকার তখন সে সেটা দাঁড় করায়। তবে
উদ্যোক্তর বিজনেস মডেল থাকতেই হবে এটা আমি মনে করিনা। বরং আমি তাকেই উদ্যোক্তা বলি,
যে সমস্যা দেখে সমাধান করার চেষ্টা করেন। দেখবেন জ্যাম হলে কিছু
মানুষ লাঠি নিয়ে “ডানে যান বামে যান” বলে
জ্যাম মুক্ত করার চেষ্টা করেন। এটির কোন বিজনেস মডেল নেই। কিন্তু আমি ওনাকেও
উদ্যোক্তা মনে করি। কারণ তিনিও একটা সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করছেন।
অন্যদিকে প্রথমেই যারা চিন্তা করে টাকা ইনকাম করতে হবে
তারপর সে চিন্তা করে কোন পদ্ধতিতে টাকা কামানো যায়, আমি তাদেরকে উদ্যোক্তা বলি
না, তাদেরকে বলি ব্যবসায়ী। টাকা-ই যখন প্রথম ও প্রধান লক্ষ্য
হয়, তখন প্রবলেম দূর না হয়ে বরং প্রবলেম বের হতে পারে। প্রায়
সব খাবারে ফরমালিন তো এই ধরনের ব্যবসার-ই উদাহরণ।
আপনাদের উদ্যোগ তো তাহলে অনেক গুলো। তো
সবগুলো প্রতিষ্ঠান মিলিয়ে সর্বমোট আপনার কতজন কর্মচারী আছেন?
আমরা আসলে কর্মচারী শব্দটা ব্যবহার করিনা, আমরা বলি “টিম মেম্বার”। তো ফুলটাইম, পার্টটাইম
সব মিলিয়ে “টিম মেম্বার” এর সংখ্যা এখন
১ হাজারের উপর। এটি প্রতিনিয়ত বাড়ছে। আপনি হয়তো ৩ মাস পর জিজ্ঞাসা করলে সংখ্যাটা
আরও বাড়বে।
একসাথে এতগুলো কোম্পানি এবং এই যে এতজন “টিম
মেম্বার” কিভাবে পরিচালনা করেন?
আমি
তো চালাই না,
আমরা চালাই।
আমাকে শুধু নজর রাখতে হয় মানুষ গুলোর ওপরে। মানুষগুলো
ঠিকভাবে টিম নিয়ে কাজ করছে কিনা। এমন অনেক কিছু আছে আমি জানিই না। খুব বড় কিছু না
হলে আমার টিম মেম্বারা সেগুলো ঠিক করে ফেলে। কিন্তু প্রথম দিকে অনেক কিছুই সরাসরি
দেখতে হতো। এখন বরং আমি তাদের এমপাওয়ার করছি এবং তাদের মধ্যে উদ্যোগ নেয়ার
মানসিকতা ও যোগ্যতা তৈরির চেষ্টা করি।
আপনি আপনার টিম মেম্বারদের আপনার সাথে দীর্ঘ
সময় কাজ করার জন্য কিভাবে অনুপ্রানিত করেন ?
ভিশন! এগুলোকে অবশ্য কিতাবি কথা বলে মনে হয়। আসলে এগুলো কোন
কিতাবি কথা না। আলটিমেট ভিশনের কারণেই তারা দীর্ঘ সময় কাজ করার জন্য অনুপ্রানিত
হয়। প্রতিষ্ঠানের ভিশনের সাথে সাথে যখন তাদের মিশন মিলে যায় করে তখন প্রতিষ্ঠানের
লক্ষ্য আর তাদের লক্ষ্য মিলে মিশে যায়। তখন হয়ত তাদের কাছে এটা চাকরি মনে হয় না, বরং নিজের
প্রতিষ্ঠান মনে হয়। নিজের প্রতিষ্ঠান ছেড়ে তো আর চলে যাওয়া যায় না।
কিভাবে আপনার টিম মেম্বারা আপনার ভিশনের সাথে
এক হয়?
আমরা যতটুকু জানি আপনার নতুন টিম মেম্বার নেওয়ার প্রক্রিয়াটি অনেক
বড় এবং মজার। এটির ব্যাপারে একটু বলবেন?
জি! খুব ইম্পরট্যান্ট একটা ব্যপার হচ্ছে রিসোর্স হায়ারিং।
আপনার কোম্পানির কোর ভেলু বা ভিশনের সাথে যায় এরকম মানুষ নিতে হবে। আমাদের রিসোর্স
হায়ারিং প্রসেস অনেক লম্বা এবং অনেকগুলো ফিল্টার সিস্টেম আছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড়
ফিল্টার হচ্ছে কালচারাল ফিল্টার। কেউ যদি অন্যরকমের কালচারের সঙ্গে ফিট না হয় এবং
উনি যদি বাংলাদেশের সবচেয়ে দক্ষ ব্যক্তিও হয় তারপরেও আমরা ওনাকে নিবনা। কালচারাল
ফিট হবার আরেকটা ইস্যু হল কোর ভ্যালুস। যেমন, আমারা আমাদের দেশের প্রবলেম
নিয়ে ফেসিনেটেড, হতে পারে সবাই এটি নিয়ে ফেসিনেটেড না। তাহলে
যে এটা নিয়ে ফেসিনেটেড না কিন্তু অনেক দক্ষ মানুষ, আমি তাকে
হায়ার করবো না। আমি তাকে হায়ার করবো না, এই জন্য না যে সে
অযোগ্য। নিব না এই জন্য যে সে আমাদের টিমের স্পিরিটের সাথে তার স্পিরিট মিলবে না।
আমাদের আবেগ তাকে আবেগ তাড়িত করবে না। আর যদি আমাদের আবেগ তার আবেগের সাথে একাত্ম
হয় তাহলে সে এইখানে জব করাটাকে জব মনে করবে না, মনে করবে এটা
তার নিজের কাজ।
রিক্রুটমেন্ট প্রক্রিয়ার অংশগ্রহণ হিসাবে আমাদের একটা
ট্রায়াল সেশন হয়। হায়ার করার আগে এটি চলে কখনো ৭ দিন, কখনো ৯
দিন, কমপক্ষে ৫ দিন পর্যন্ত। প্রায় ৫,৭
বা ৯ দিন ধরে ওরা আমাদের এখানে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ট্রায়াল সেশন করে, যেগুলো অনেক ইন্টারেস্টিং হয়। যদিও অনেক প্রেশার থাকে তবে ইন্টারেস্টিং
হবার কারনে ক্লান্ত হয়না। আপনি চিন্তা করেন নরমালি ৩০ মিনিটের একটা ইন্টারভিউ নিয়ে
আমি একজনকে হায়ার করে ফেলব? এতো সহজ? আমি
কি সুপারম্যান? কিন্তু এই ৫,৭ দিন একজন
মানুষ কি তার প্রোফাইল লুকিয়ে রাখতে পারবে? অসম্ভব! এই
কয়েকদিনে একজন মানুষের সব কিছু বের হয়েই আসবে। ট্রায়ালের এই প্রসেসগুলো চালানো
আমাদের জন্য অনেক ব্যয়বহুল। এমন হয়েছে যে ট্রায়ালে থাকা ২০ জনের মধ্যে আমরা ১
জনকেও নিতে পারিনি। কিন্তু সবাইকে আমরা এই কয়েকদিনের জন্য টাকা দিয়েছি। যদিও তাঁরা
জব খুঁজতে এসেছে তারপরেও আমরা তাদের পে করছি। ৫,৭ দিন
ট্রায়াল চালানোর জন্য যত ম্যানপাওয়ার লাগছে সেগুলোর খরচ করতে আমরা কার্পন্য করছি
না। কিন্তু এতো টাকা আমরা খরচ করছি কেন? শুধু মাত্র সঠিক
মানুষ পাবার জন্য।
একটা কোম্পানি
এর চেয়ার টেবিল এর তেমন কোন দাম নেই দাম হচ্ছে মানুষগুলোর।
কিছুদিন আগেই “বাংলা ট্রিবিউনে” আপনার
একটি সাক্ষাত্কার হয় “শুরু করেছি ৫ হাজার কোটি
টাকা নিয়ে“। কিভাবে আপনি ৫ হাজার কোটি টাকা নিয়ে শুরু
করলেন ?
এই টাকা ছিল আমার মস্তিষ্কে। কারণ, নিউরোসাইন্টিস্টদের
ভাষ্য মতে, একটি কম্পিউটারের বিপরীতে একজন মানুষের
মস্তিষ্কের দাম কমপক্ষে ৫ হাজার কোটি টাকার সমান। এই টাকা মাথায় রেখে নগদ ৬ হাজার
টাকা নিয়ে আমার উদ্যোক্তা হওয়ার পথে যাত্রা শুরু। প্রতিটি মানুষই ৫ হাজার কোটি
টাকার অধিকারী। কেবল এর ব্যবহার জানতে হবে।
আপনাদের ভিশন এর একটা গুরুত্বপূর্ণ দিক হল
দেশে গবেষণার পরিবেশ তৈরি করা। আমরা জেনেছি, আপনারা AIUB সহ আরও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে চুক্তি করছেন একসাথে রিসার্চ করার
জন্য। এই চুক্তির প্লান কী?
এই চুক্তির প্লান হচ্ছে সুদূরপ্রসারি। কারন আমাদের দেশের
শিল্প এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সহযোগিতা নেই। কিন্তু আমরা যদি রিসার্চক্ষেত্র
তৈরি করতে চাই,
তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করতে হবে। কোম্পানির সাথে যদি
বিশ্ববিদ্যালয়ের সংযোগ করা না হয় তাহলে রিসার্চ হবেনা। আমাদের প্লান এইটাই,
আমাদের যে লোকাল সমস্যাগুলো আছে আমরা যাতে সেগুলো সমাধান করতে পারি।
মাথায় রাখতে হয় যে, আমাদের দেশের সমস্যা অন্যান্য দেশের সমস্যা থেকে আলাদা। বাংলাদেশের ফলে
ফরমালিন থাকে, আমেরিকায় না। বাংলাদেশের বাস-এ পেট্রল বোমা মারে ওখানে এই সমস্যা নেই। এই
সমস্যাগুলো আমেরিকানরা সমাধান করবে না। এটি আমাদের সমস্যা, আমাদেরই সমাধান করতে হবে।
এরই জন্য আমরা AIUB ছাড়াও আরও চারটি
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যৌথ গবেষণা করার জন্য চুক্তি করেছি। যার লক্ষ্য হলো
ইন্ডাস্ট্রি এবং ইউনির্ভাসিটির যৌথ উদ্যোগে দেশের বিভিন্ন সমস্যা নিরসনের
পথ/প্রক্রিয়া নিয়ে গবেষণা করা।
আপনার সফলতার পেছনে কোন জিনিসটির অবদান
সবচেয়ে বেশি?
আমার আবেগ (passion)! আর সেই সাথে আমার
নিজের মন নিয়ন্ত্রণ করার যোগ্যতা।
উদ্যোক্তা হিসেবে, কোন
মানুষটির চিন্তা-ভাবনা আপনার কাছে ভাল লাগে উদ্যোক্তা?
নির্দিষ্ট ওরকম কাউকে অনুসরণ করিনা। যদিও Steve Jobs এর
অনেক দর্শন (philosophy) আমার পছন্দ না, কিন্তু ওনার কিছু কিছু বিষয় আমার খুব পছন্দের। ওনার আবেগ, পাগলামি এই বিষয়গুলো আমার অনেক পছন্দের।
প্রতিদিন আপনার কাছে এমন কি মনে হয়, যে আপনি
সবার থেকে আলাদা?
প্রত্যেকটি মানুষই আলাদা। তবে আমার নিজের কাছে নিজের ভাল
দিকের মধ্যে ১ নম্বরে রাখি যেটা সেটা হল আমার নিজের মন নিয়ন্ত্রনের ক্ষমতা, যেটা একটু
আগেই উল্লেখ করেছি। এছাড়া আমি অনেক বাচ্চা সুলভ আর আমি অনেক পজেটিভ চিন্তা করি।
অনেক খারাপ কিছুর মধ্যেও আমি কিভাবে যেন ভাল কিছু খুজে পাই। যেমন উদাহরন হিসেবে
বলা যায়, ঢাকা শহরের জ্যাম অনেক পছন্দ করি। জ্যামের সময়টা
আমি পড়াশোনা করি। জ্যাম যত লম্বা হয় আমার তত ভাল লাগে। যদি ড্রাইভার খুব তাড়াতাড়ি
নির্দিষ্ট স্থানে চলে যায়, আমার মেজাজ খারাপ হয়। মনে হয়,
জ্যাম আরেকটু লম্বা হলে আরেকটু বেশি পড়া যেত।
আপনার প্রতিদিনকার কাজ সম্পাদন করার জন্য কোন
ডিভাইসটি সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করে থাকেন এবং কেন?
iPad বই
পড়ার জন্য এবং TEDx Talk এর ভিডিও দেখার জন্য।
প্রতিদিনের টু-ডু লিস্ট তৈরি করার জন্য কোন
সফটওয়্যার/পন্থাটি আপনার কাছে সেরা মনে হয়?
আমার একটা ডায়রি আছে সেটির মধ্যে প্লানগুলো করি। আর যখন
কাউকে কোন কাজ দেওয়া হয় তখন ছোট্ট একটা ডায়রি ব্যবহার করি যেটি সাথে রাখি সবসময়।
একজন বাংলাদেশি হিসেবে যানজট আমাদের নিত্য
দিনের সঙ্গী। আপনি যানজটের সময়টাকে সদ্ব্যবহার করার জন্য কি করেন?
আমি কিন্তু ঢাকা শহরের জ্যাম অনেক পছন্দ করি। জ্যামের সময়টা
আমি পড়াশোনা করি। জ্যাম যত লম্বা হয় আমার তত ভাল লাগে। যদি ড্রাইভার খুব তাড়াতাড়ি
নির্দিষ্ট স্থানে চলে যায়,
আমার মেজাজ খারাপ হয়। আমার অভ্যাস হয়ে গিয়েছে যত সমস্যাই থাকুক
রাস্তায় আমি পড়তে পারি। পড়াটা আমাকে অনেক ফেসিনেট করে।
আপনার কাজের স্থানটি কেমন?
রকমারি, ফ্যাক্টরি বা অন্য অফিস গুলোতেও আমার বা
আমার পার্টনার লিটনের আলাদা বসার রুম নেই। এখন শুধু অন্যরকমের হেড অফিস অর্থাৎ
কাওরান বাজারে আমার আর লিটনের আলাদা রুম আছে। সেটাও ভেঙ্গে ফেলার প্লান করছি,
যাতে বাকিদের সাথে বাকিদের মত করেই অফিস করতে পারি। উদ্ভাসের এই যে
এতগুলো ব্রাঞ্চ, সেটার কোনটাতেও আমার বা লিটনের কোন আলাদা
করে বসার জায়গা নেই। এখন পর্যন্ত নেই। মাঝখানে বেইলি রোডের উদ্ভাস এ আমার আর
লিটনের বসার জন্য একটা রুম ছিল বাহিরের মানুষদের সাথে দেখা করার জন্য। কিন্তু পরে
ওইটাও ভেঙ্গে ক্লাস রুম বানিয়েছি। আমরা উদ্ভাস এ গেলে, যেখানে
বসার জায়গা পাই বসি (সামনের ডেস্ক এ অভিভাবকরা যেখানে বসেন)। এতে যেটা হয় পরিবেশের
সাথে থাকা যায়। তারপর ধরেন, ঐসময়ে আরও কিছু অভিভাবকরা আসলেন
তখন আমি নিজে দাঁড়িয়ে তাদের বসার ব্যবস্থা করে দেই। এতে যেটা হয়, আমাকে আমার টিম মেম্বারদের কে শিখানোর দরকার নেই যে তুমি আরেকজনকে কিভাবে
সম্মান করবে।
আপনার দৈনিক ঘুমানোর সময়সূচি কেমন ?
গড়ে,
আমি এখন ৭ ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করি। টার্গেট হচ্ছে সবসময় ৮ ঘণ্টা
করে ঘুমাব। অনেকে ঘুম কমানোকে উৎসাহিত করে কিন্তু আমি মোটেও করিনা। আমি বলবো,
পারলে সবসময় ৮ ঘণ্টা করে ঘুমান।
আমরা শুনেছি, আপনার
একটি প্রিয় কথা আছে “বড় হওয়ার দরকার নাই ছোট হও!”। কেন আপনি এটি ভাবেন?
আমি অনেক বাচ্চা সুলভ। আমি এখনও সিঁড়িতে ওটার সময় লাফিয়ে
লাফিয়ে উঠি। মানুষজন দেখলে ভাবে বাচ্চা ছেলে। আমি এখন সবাইকে বলিঃ
বড় হওয়ার দরকার
নেই ছোট হও! ছোটরা ক্ষুদ্র জিনিসে আনন্দ পায়, তুচ্ছ জিনিসে আনন্দ পায়।
এই জিনিসটা খুব দরকারি। কারণ তুচ্ছ জিনিসে যদি কেউ আনন্দ
পায় তাহলে সে সবসময়ে মটিভেটেড থাকবে। আমরা যত বড় হতে থাকি তত তুচ্ছ জিনিসে আনন্দ
পেলে মনে করি আমি ছোট! তাই আমরা ভাবি, আমাদেরকে বড় বড় জিনিসে আনন্দ
পেতে হবে! ওই বড় বড় জিনিস তো আর প্রতিদিন ঘটেনা। ওইটার জন্য দুই বছর অপেক্ষা করি,
দুই বছর ধরে চিন্তা ভাবনা। যেদিন আমরা সেটি পাই সেটির আনন্দ কি দুই
বছর থাকে? আনন্দ থাকে বেশি হলে ৭ দিন। তাই ছোট হওয়া ভাল কারণ
তারা তুচ্ছ জিনিসে আনন্দ পায়। তাই তারা খুশি/সুখী মানুষ হবে, মটিভেটেড থাকবে সবসময় এবং প্রচুর শিখতে থাকবে। বড় অবস্থায় আমরা বেশি
শিখিনা কেন? কারন যাই দেখিনা কেন মটিভেটেড হচ্ছিনা, খুশি হচ্ছিনা। তাই নতুন কিছু শিখতে পারছিনা। এ জন্য সবার বাচ্চা হওয়া
উচিৎ।
আমার ভিতরে একটা বাচ্চাসলুভ ভাব আছে যেটি আমি আরও বাড়াতে
চাই। আমি এটি জাফর ইকবাল স্যারকে দেখে আরও বেশি অনুপ্রাণিত হই। এ পর্যন্ত ৩০ হাজার
কিলোমিটার ভ্রমণ করেছি। একবার স্যারের সাথে রাঙ্গামাটি গিয়েছিলাম গণিত
অলিম্পিয়াডের কাজে। তখন মুনির ভাইয়ের বাচ্চা রুবাই অনেক পিচ্চি ছিল। রুবাই বলল
চোর-পুলিশ খেলবে। এখন বড়দের সামনে পিচ্চিরা যদি বলে চোর-পুলিশ খেলবে বড়রা নিতান্তই
তাচ্ছিল্য করে বলবে যাও এখান থেকে। কিন্তু জাফর স্যার বিশাল উদ্দীপনা নিয়ে
চোর-পুলিশ লিখে সে যে মজা নিয়ে খেলতে ছিল! দেখলে অবিশ্বাস লাগবে একটা মানুষ এত বাচ্চাসলুভ
হতে পারে কিভাবে এত বয়স হওয়া সত্ত্বেও! তাই স্যারের সাথে থাকার ফলে এটি আরও
বেড়েছে। স্যারকে না দেখলে বোধ হয় আমি ভাবতাম আমার বাচ্চাসুলভ আচরণটা ভাল
দেখাচ্ছেনা,
আমাকে আরও গম্ভীর হওয়া দরকার।
একজন উদ্যোক্তার কোন তিনটি বই বা সিনেমা
অবশ্যই পড়া বা দেখা উচিৎ ?
আমি বলব বই পড়তে থাকুন যত পারেন। আমাজনএ যান, টপ
রাঙ্কিং এর উদ্যোক্তাদের বইগুলো সব পরে ফেলেন। তবে আমি বলব Patrick Lencioni এর সবগুলো বই পড়ার
জন্য।এছাড়াও
§
Delivering
Happiness
এই তিনটি বই বিশেষ ভাবে উল্লেখ করা যায়। অন্য কোন সময়
জিজ্ঞেস করলে হয়ত অন্য কোন বই এর নাম বলতে পারি।
উদ্যোক্তাদের ম্যানেজমেন্ট স্কিল বাড়ানোর
জন্য আপনারা নাকি কিছু বই অনুবাদ করছেন, কোন বইগুলো?
বাংলাদেশী উদ্যোক্তাদের ভাল ম্যানেজমেন্ট স্কিল তৈরি করার
জন্য আমরা গ্লোবালি খুব ভাল বই এর কপিরাইট কিনেছি এবং অনুবাদ শুরু করেছি। যেমন
একটি বই হচ্ছে (ম্যানেজমেন্ট রিলেটেড) The Five Dysfunctions of a Team। এখনো বের হয়নি, প্রুফরিডে
আছে। এরপর-ই হয়ত Delivering Happiness –এর অনুবাদ তা আসবে।
তো অন্যরকম সম্পর্কে সবশেষ প্রশ্ন যে আপনারা
যে “অন্যরকম বাংলাদেশ” এর স্বপ্ন দেখছেন এ ব্যাপারে
আপনারা কতটুকু আশাবাদী?
দেশ হিসেবে আমরা অনেক ভাল একটি দেশ, মানুষ হিসেবে আমরা অসাধারণ। কিন্তু আমরা
নিজেরাই জানি না। আমরা আমাদের নিজেদেরকে অনেক খারাপ মনে করি। এটিই প্রথম সমস্যা
এবং আমাদের যে কি পরিমাণ সম্ভাবনা আছে উন্নতি করার সেটিও আমরা উপলব্ধি করিনা।
আমার দেখা মতে, একজন আমেরিকানের চাইতে
আমাদের বুদ্ধিমত্তা অনেক বেশি। আমাদের যে করুণ শিক্ষা ব্যবস্থা তার মধ্যেও যে এতো
ভালো কিছু হচ্ছে কারণ আমাদের ক্রাইসিস রয়েছে। যেমন, আমেরিকাতে
একজন মানুষকে গাড়ি চালাতে হলে কী করতে হয়? সবুজ বাতি,
লাল বাতি শিখতে হয়, সবুজ বাতি দেখলে চলে যেতে
হয়, লাল বাতিতে থামতে হয়। আর আমাদের দেশে প্রতি মুহূর্তে
একজন ড্রাইভারকে শ’খানেক ক্যালকুলেশন করতে হয়। আমরা
ক্রাইসিসের মধ্যে দিয়ে বড় হই বলে আমাদের অনেক বেশি যোগ্যতা তৈরি হয়। এর সঙ্গে
শিক্ষা পদ্ধতিটা আর একটু ভালো হলেই আমরা যে কোথায় চলে যেতাম আমরা নিজেরাই জানি
না।
-১ কে উল্টে দিলে হয় +১ আর -৫ কে উল্টে দিলে হয় +৫, অর্থাৎ
গাণিতিকভাবে দেখান যায় যে, সংখ্যারেখায় যে সংখ্যাটি যত Negative
তাকে উল্টে দিলে সেটি হয় তত Positive. বাংলাদেশ
দুর্নীতিতে ৫ বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে দেখে আমি আরও বেশি স্বপ্ন দেখার সাহস পাই। ৫
বার চ্যাম্পিয়ন হওয়া প্রমাণ করে যে আমরা কি পরিমান পটেনশিয়াল জাতি, শুধু মানসিকতা আর কাজকর্মের দিকটা একটু উল্টে দিতে হবে। আর উল্টে দিলে
আমরা যে কীরকম অসম্ভব কে সম্ভব করতে পারি, তার প্রমাণ ১৯৭১।
তাই আমি মনে প্রানে বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ অন্যরকম হবেই।
বাংলাদেশের কিছু সম্ভাবনাময় উদ্যোক্তাদের
সম্পর্কে বলুন যাদের সফলতার গল্প আপনার কাছে উল্লেখযোগ্য মনে হয়?
আমার স্টুডেন্ট নিজামের কোম্পানি WeDevs। নিজাম রাজশাহী
বিশ্ববিদ্যালয়ের। নিজাম এবং এক বন্ধু মিলে কোম্পানিটি করেছে। এটি লঞ্চ করার ১১
মাসে ওরা ১১ লাখ ডলার উপার্জন করে শুধু একটা প্লাগইন বিক্রি করে। এখন ওদের কয়েকটা
প্রোডাক্ট আছে মার্কেটে। ১৫ জনের মত কর্মচারীসহ ধানমন্ডিতে অফিস আছে।
শূন্যস্থান পুরন করুন, আমি এই
একই প্রশ্নের উত্তর গুলো ______ কাছ
থেকে শুনতে পছন্দ করব।
আইটি সেক্টরের ফাহিম মাশরুর ভাই। বিডি-জবস যখন তিনি
শুরু করছেন তখন থেকে এই পর্যায়ে আসতে সে যে পরিমান লেগে ছিলেন আমার মনে হয় সেই
গল্পগুলো সবাই জানলে অনেক অনুপ্রাণিত হবেন।
Post a Comment
0 comments
Dear readers, after reading the Content please ask for advice and to provide constructive feedback Please Write Relevant Comment with Polite Language.Your comments inspired me to continue blogging. Your opinion much more valuable to me. Thank you.